Category Archives: Salah (Prayer)

আরবি না বুঝে নামায পড়ার ফজিলত!

আমরা যারা আরবি বুঝি না, নামায পড়াটা আমাদের কাছে একটি অনুষ্ঠান মাত্র। আমরা ভুল আরবিতে কিছু অর্থহীন আপত্তিকর শব্দ করি, হাত পা উঠা নামা করি, উপর-নীচ হই, ডানে-বামে তাকাই – আর ধরে নেই চমৎকার আল্লাহর ইবাদত করা হল। আরবি যাদের মাতৃভাষা, তারা যখন আমাদেরকে কিছুই না বুঝে আরবিতে নামায পড়তে দেখে, তখন তারা বড়ই অবাক হয় – কেন আমরা কিছুই না বুঝে এরকম একটা কাজ দিনের পর দিন করে যাচ্ছি? যেখানে তারা বুঝে শুনে নিজের মাতৃভাষায় আল্লাহর কথা স্মরণ করছে! একটা উদাহরণ দেই,আমরা যখন বলি – কুলহু আল্লাহু আহাদ – এর বাংলা করলে দাঁড়ায় – খাও, আল্লাহ এক, অদ্বিতীয়। “কুল” অর্থ “খাও”। “কু’ল” (গলার ভিতর থেকে কু বলা) অর্থ “বল”। প্রতিদিন আমরা কত বার না বুঝে বলে যাচ্ছি – খাও, আল্লাহ এক, অদ্বিতীয় – এই ধরে নিয়ে যে নামাযে আমরা বেশ কিছু ভালো কথা বলছি, কিন্তু কি যে বলছি তা না জানলেও চলে, আল্লাহ বুঝলেই হল। আপনার সাথে যখন কোন আরব নামায পড়বে এবং আপনি ইমামতি করবেন, সে আরব বেচারা কি কষ্ট করে হাসি এবং রাগ চেপে রেখে আপনার সাথে নামায পড়বে, কখনও ভেবে দেখেছেন কি?

ধরুন আল্লাহ চাইনিজ ভাষায় কু’রআন নাযিল করেছেন। শেষ নবী ছিলেন একজন চাইনিজ এবং ইসলামের প্রচার হয়েছে চায়না থেকে। আপনি প্রতিদিন সকালে উঠে কান পর্যন্ত হাত তুলে জোরে জোরে বলছেনঃ

চেন্‌ চুন্‌ শি চুই্‌ ওয়েদা

ব্যপারটা আমরা, বাঙালিদের কাছে, কতখানি হাস্যকর চিন্তা করে দেখুন। ঠিক একই ভাবে আরবদের কাছে আমাদের আরবিতে নামায পড়া, দোয়া পড়াটাও একই রকম হাস্যকর ব্যপার। Read the rest of this entry

কিবলার সাথে পরিচিতি

কথা বলছিলাম একজন মুরুব্বীর সাথে। তার মনের দুঃখ তার ছেলে নামাজ পড়ে না। শুনে খুব অবাক এবং খারাপ লাগল, কারণ সেই মুরুব্বীকে দেখি সবসময় পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে পড়েন এবং তাকে দেখে আমি নিজেই খুব অনুপ্রানিত। এই বয়সে সিঁড়ি বেয়ে দিনে পাঁচবার উঠানামা করা সত্যিই কঠিন। কথা বলতে গিয়ে বুঝতে পারলাম তিনি তার ছেলেকে ছোট বেলায় সাথে করে মসজিদে আনতে চাইতেননা, কারণ ছেলে ছোট তাই মসজিদে নিয়ে কি হবে এবং বাসায়ও তেমন একটা চাপ দিতেননা। এতে কি আসলে আমরা নিজের অজান্তে সন্তানদের ক্ষতি করে ফেলছিনা? আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা বলছেন –

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا قُوا أَنفُسَكُمْ وَأَهْلِيكُمْ نَارًا وَقُودُهَا النَّاسُ

“হে মুমিনগণ, তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে সেই অগ্নি থেকে রক্ষা কর, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর” (সূরা আত-তাহরীম, আয়াত ৬)

আসলে মা-বাবার দায়িত্ব হচ্ছে সৃষ্টিকর্তার সাথে তার সন্তানকে পরিচয় করিয়ে দেয়া, আর এক্ষেত্রে নামাজ ছাড়া উত্তম আর কি হতে পারে? Read the rest of this entry

জুম’আর নামায হতে পারে আমাদের পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের অনুপ্রেরনা

আমরা সাধারণ মুসলিমরা প্রতিদিন অনেক ভাল কাজ করি, যেমন আমাদের পরিচিতদের আমারা সালাম দেই, মা বাবার সাথে ভাল ব্যবহার করি, জুম’আর নামায পড়ি, দানখয়রাত করি। আমাদের এই ভাল কাজগুলোকে সবার সামনে তুলে ধরাটাই হচ্ছে এই লেখার মূল উদ্দেশ্য। আর এর মাধ্যমে আমি চেষ্টা করব সাধারণ মুসলিমদেরকে আর একটু ভাল অথবা প্র্যাকটিসিং মুসলিম হয়ে গড়ে উঠতে সাহায্য করতে। আর মাধ্যম হচ্ছে আমরা যে ভাল কাজগুলো করি সে কাজগুলোকেই তাদের সামনে প্রতীয়মান করার দ্বারা। এই ভাল কাজগুলোকে নিয়ে আমার এই ধারাবাহিক প্রবন্ধে কাজ করব ইনশাল্লাহ্, যার মাধ্যমে আমরা আমাদের মূল লক্ষ্য স্থির করে মুসলিম জীবনের প্রকৃত সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হতে পারি।

লেখাটি একটি ঘটনা দিয়ে শুরু করলে হয়ত আপনাদের ভাল বুঝাতে পারব। বন্ধের দিন আমরা বন্ধুরা সবাই মিলে আড্ডা দেই। আর তাই এবার আমরা শুক্রবার দিনটিকে ঠিক করলাম সবাই একসাথে দেখা করব এবং কিছু কোয়ালিটি টাইম স্পেন্ড করব বলে। যেহেতু আমরা সদ্য ইউনিভার্সিটি থেকে বের হয়ে কর্পোরেট জগতে প্রবেশ করেছি সেহেতু বুঝতেই পারছেন আমাদের কী নিয়ে কথা হতে পারে। চাকরি, বিয়ে, ঘরসংসার, প্রোমোশন এইসব রিয়েলিস্টিক ও রোমাঞ্চকর আলোচনাতে আমরা সবাই মেতে উঠলাম, তখন তা যেন থামতেই চাইছেনা। মজার কিংবা দুঃখের যাই বলেননা কেন, ব্যাপার হচ্ছে এই আড্ডার সন্ধ্যাতে আমরা ভুলেই গিয়েছিলাম যে কিছুক্ষন পর ইশার নামাযের জন্য রওনা দেওয়া লাগবে। সবাইকে একসাথে পেয়ে আমি নামাযে যাওয়ার কথা বলে ফেললাম। আর তাতেই হয়েছে আমার কাল, সবাই আমাকে পেয়ে বসল এবং বলা শুরু করল “বেশ উপদেষ্টা হয়ে গেছ, তুমি যাও নামাযে, নিজের চরকায় তেল দাও” এবং এধরণের আরো অনেক কথা।  

বেশ ভালই লাগছিল তাদের কথা শুনতে, কারণ আমারও সময় আসবে। আর আমার কৌশল হচ্ছে “আগে বলতে সুযোগ দাও, তারপর আমি বলব।” Read the rest of this entry